মানব শরীরে ভিটামিন ডি-র ঘাটতি
অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অথচ সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা। বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যার প্রায় ৫০%
মানুষ ভিটামিন ডি-র অভাবে ভোগে। এ কথা রীতিমতো পরীক্ষিত ও প্রমাণিত যে ভিটামিন
ডি-এর অভাবে ভুগছেন এ দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় 70 শতাংশ মানুষ৷ তার ফলে অসংখ্য রোগ বাসা বাঁধছে শরীরে৷
আমরা জানি ভিটামিন ডি এর অভাব হলে
হাড়ের গঠন ভঙ্গুর হয়। কারন D3 কম থাকলে শরীরে ক্যালসিয়াম শোষণ কমে যায়।
কিন্তু এই প্রচলিত ধারণার বাইরে এমন
আরো অনেক উপসর্গ আছে যেগুলো শরীরে ভিটামিন ডি কম থাকার কারণেই হয়ে থাকে। সেই সব
উপসর্গ নিয়ে ডাক্তার বাবুর কাছে গেলে তিনি একটি রক্ত পরীক্ষার কথা লিখে দেন। রক্ত
পরীক্ষার মাধ্যমেই বোঝা যায় শরীরে ডি ভিটামিন সঠিক মাত্রায় আছে না কম আছে।
কম থাকলে কিছু ওষুধ এবং কিছু পরামর্শ
দেন।
এবার আমরা দেখব কি এমন জটিল উপসর্গ যা শরীরে ভিটামিন ডি এর অভাবে হয়।
১। ক্লান্তি, ব্যথা-যন্ত্রণা, সারাক্ষণ অসুস্থতা বোধ
২। হাড়
এবং পেশীতে যন্ত্রণা বা সাধারণ দুর্বলতা যার ফলে সিঁড়ি চড়তে বা মেঝেতে বসার পর
উঠতে সমস্যা হতে পারে।
৩। ।ভিটামিন
ডি-র অভাব খুব বেশি হলে শরীরের বিভিন্ন অংশের বিশেষত আপনার উরু, শ্রোণী এবং হিপের হাড় ভেঙ্গে যেতে পারে।
৪। ।অত্যধিক
চুল পড়া।
৫। আঘাত
সারতে অনেক সময় নেওয়া।
৬। অবসাদ
বা বিষণ্নতায়
ভোগা।
৭। খাবার হজমে সমস্যা
৮। সন্তান ধারনে
অক্ষমতা।
৯।। সোরিয়াসিস
১০। ত্বকে লালচে ফুসকুড়ি
১১। হাইপারটেনশন অথবা কোনো কার্ডিওভাস্কুলার ডিজিজ
১২। শ্বসনতন্ত্রের অসুস্থতা
১৩। কিডনিতে সমস্যা
১৪। ঘন ঘন ইনফেকশন
আপনার যদি মনে হয় এসব লক্ষণের
কোনোটা আপনার শরীরে দেখা দিয়েছে, তাহলে নিজের ডাক্তারের সাথে কথা বলুন।
ভিটামিন ডি ঘাটতির কারণ কী কী
ডাক্তার বাবুদের সাথে কথা বলে যেটুকু জানা যাচ্ছে সাধারণ ভাবে শরীরে এই ডি ভিটামিন এর অভাবের কারণ হল-
১) দূষণীয় এলাকায় বিশেষ করে ব্যস্ত রাস্তার ধারে , কলকারখানার কাছাকাছি এলাকায় বসবাস করা।
২) বাড়ির ভিতরে বেশি সময় কাটানো। শরীরে একটু ও রোদ না লাগানো।
৩) ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার না খাওয়া। আত্যধিক মদ্যপান ও ধূমপান এর অভ্যাস।
৪) সূর্যালোকহীন বাড়িতে বসবাস। বিশেষ করে যাদের সারাদিন কোন আফিসে এ সি র মধ্যে বসে কাজ করতে হয়, যার দরজা জানালা সব সময় বন্ধ।
ভিটামিন ডি এর ঘাটতি
এড়াতে আমরা কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারি
আমরা সহজেই সূর্যালোক থাকে ভিটামিন ডি পেতে পারি। তবে কিছু খাবার আছে যা থেকে আমরা ভিটামিন ডি এবং ক্যালসিয়ামে প্রচুর পরিমাণে পেতে পারি। যেমন-স্যামন মাছ, ডিমের কুসুম, সোয়া দুধ, দুগ্ধজাত সামগ্রী, দই, মাশরুম, চিজ এবং কমলালেবু ইত্যাদি।
অস্থিরোগ
বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘‘নানা
সমীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে যে আমাদের শরীরে সূর্যালোক থেকে যতটা ভিটামিন ডি-এর
আত্তীকরণ হওয়ার কথা, ততটা সম্ভবত হয় না৷ তাই কেবল সূর্যালোককেই
সমাধান বলে ভেবে নিলে ভুল করবেন৷ জোর দিন সুষম খাওয়াদাওয়ার উপর৷ ডিম, দুধ বা দুধজাত খাবার, সবুজ শাকসবজি, ফল রাখুন রোজের খাদ্যতালিকায়৷ মনে রাখবেন, টানা 10-12 ঘণ্টা বসে থাকার জন্য আমাদের শরীর তৈরি হয়নি৷
তাই যতটা সম্ভব হাঁটাচলা করুন, সচল থাকুন৷ নিয়মিত ব্যায়াম করলে ও ধূমপান-মদ্যপান থেকে দূরে থাকলে অনেক
সমস্যা থেকে বাঁচা যায়৷’’
0 Comments