দ্বাদশ শ্রেনি। ইতিহাস। অধ্যায় ভিত্তিক স্টাডি মেটিরিয়াল।
Class-12 History chapter 1
পৌরাণিক কাহিনী, কিংবদন্তি, লোককথা, স্মৃতি কথা এবং মৌখিক ঐতিহ্য
প্রশ্ন-1 স্মৃতিকথার সংজ্ঞা দাও। ইতিহাস রচনায় স্মৃতিকথার
গুরুত্ব কী?
উত্তর- কোনো ঐতিহাসিক
ঘটনার সঙ্গে যুক্ত বা ঐতিহাসিক কোনো
ঘটনার সাক্ষী কোনো ব্যক্তি তঁার
অতীত স্মৃতি থেকে অতীত ঘটনাটির
যে বিবরণ দেন তাকে স্মৃতিকথা
বলা হয়। পরবর্তীকালে ওই
ব্যক্তির দেওয়া স্মৃতিকথায় উল্লিখিত বিভিন্ন তথ্যগুলি ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থগুলির মধ্যে অন্যতম হল ‘স্মৃতিকথা'।
স্মৃতিকথার
সংজ্ঞা : ঐতিহাসিক ও গবেষকরা বিভিন্ন
দৃষ্টিভঙ্গিতে স্মৃতিকথার ব্যাখ্যা দিয়েছেন—
(i) অতীতের স্মৃতিচারণ : স্মৃতিকথাতে একজন লেখক তার
জীবনে ঘটে যাওয়া বা
তাঁর প্রত্যক্ষ করা বিভিন্ন ঘটনার
বিবরণ তাঁর স্মৃতিকোঠা থেকে
তুলে ধরেন। তাই স্মৃতিকথাগুলি হল
বিভিন্ন অতীত ঘটনার স্মৃতিচারণ।
(ii) দৃষ্টিভঙ্গির
পার্থক্য : স্মৃতিকথা হল লেখকের এক
ধরনের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার বিবরণ যেখানে লেখক তার নিজস্ব
দৃষ্টিভঙ্গি অনুসারে কোনো ঐতিহাসিক ঘটনার
বিবরণ বা ব্যাখ্যা দেন।
(iii) সত্য বিবরণ: অতীতের কোনো গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বা ওই ঘটনার
সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত
কোনো ব্যক্তি পরবর্তীকালে তার স্মৃতি থেকে
ওই ঘটনাটির যে বিবরণ দেন
তা ‘স্মৃতিকথা’ নামে পরিচিত।
উদাহরণ
: বিখ্যাত সাহিত্যিক নারায়ণচন্দ্র সান্যালের স্মৃতিকথামূলক গ্রন্থ –‘আমি নেতাজিকে দেখেছি।
তিনি প্রত্যক্ষদর্শীরূপে সুভাষচন্দ্র বসুর রাজনৈতিক জীবনের
বিভিন্ন ঘটনার বিবরণ ওই গ্রন্থটিতে তুলে
ধরেছেন। এই স্মৃতিকথামূলক গ্রন্থটি
থেকে নেতাজি সুভাষচন্দ্র সম্পর্কে সমকালীন বিভিন্ন ঐতিহাসিক তথ্য জানা যায়।
জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী মান্না দের আত্মজীবনী ‘জীবনের
জলসাঘরে’ অপর
একটি গুরুত্বপূর্ণ স্মৃতিকথামূলক গ্রন্থ। এই গ্রন্থটি প্রায়
একশত বছরের সংগীতচর্চার ইতিহাসের জীবন্ত দলিল।
ইতিহাস রচনায়
স্মৃতিকথার গুরুত্ব
: ইতিহাসের উপাদান হিসেবে স্মৃতিকথার গুরুত্ব অপরিসীম। এই গুরুত্বগুলি হল
(i) সত্যতা
: লেখক কোনো ঘটনা বা
কাহিনির প্রত্যক্ষদর্শী | কিংবা প্রত্যক্ষভাবে ও পরােক্ষভাবে ঘটনা
বা কাহিনির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পরবর্তীকালে তার স্মৃতি থেকে
ওই ঘটনাটি লিপিবদ্ধ করেন। তাই স্মৃতিকথা কোনো
কাল্পনিক কাহিনি নয়, এতে ঘটনার
বাস্তব সত্যতা থাকে।
(ii) বিখ্যাত
ব্যক্তির বিবরণ :স্মৃতিকথাগুলির অধিকাংশই রচনা করেন সমাজের
বিখ্যাত ও সুপ্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিবর্গ।
লেখক, সাহিত্যিক, বিজ্ঞানী, রাজনীতিবিদ, বিপ্লবী আন্দোলনের নেতারাও স্মৃতিকথাগুলি লিখতে পারেন। এই কারণে স্মৃতিকথায়
অবান্তর, পক্ষপাতমূলক বা অতিরঞ্জিত ঘটনা
কম থাকে।
(iii) বাস্তব
বিবরণ : বিভিন্ন ঐতিহাসিক ব্যক্তি প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা থেকে রচনা করেন,
তাই স্মৃতিকথায় বাস্তব ঘটনার তথ্য ও বিবরণ
পাওয়া যায়। |
(iv) স্বৈরাচারের
বিবরণ : স্বৈরাচারী শাসককুল যখন। | কোনো সত্য ঘটনাকে
সংবাদপত্র বা অন্যান্য পত্রপত্রিকাতে
প্রকাশ করতে দেয় না,
গণমাধ্যমগুলির কণ্ঠ রোধ করে
রাখে তখন ‘স্মৃতিকথা ইতিহাসের
একমাত্র উপাদান। যেমন— ইহুদিদের ওপর হিটলারের নির্যাতন
বা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় । পূর্ববঙ্গের
মানুষের ওপর পাকিস্তানের সৈন্যবাহিনীর
অত্যাচার এর
গুরুত্বপূর্ণ উপাদান স্মৃতিকথা।
স্মৃতিকথার ত্রুটি : স্মৃতিকথার বেশ কতগুলি ত্রুটি
আছে। এর ফলে অনেক
সময় স্মৃতিকথা থেকে সঠিক ঐতিহাসিকউপাদান
পাওয়া যায় না। যেমন—
(i) মতাদর্শগত
সংকীর্ণতা : অনেক সময়
লেখক নিজের মতাদর্শকে সমর্থন করতে গিয়ে নিজের স্মৃতিকথায় অতীতের প্রকৃত ঘটনাকে অতিরঞ্জিত
করে তুলে ধরেন।
(ii) ভিন্নতা
: কোনো একটি ঐতিহাসিক
ঘটনা বহুকাল পরে বিভিন্ন ব্যক্তির স্মৃতিকথায় বিভিন্নভাবে ফুটে ওঠে। এর ফলে সঠিক ঘটনাটি
জানা জটিল হয়ে পড়ে। | যেমন— হলওয়েল-এর লেখা অন্ধকূপ হত্যার ঘটনা
বিভিন্ন লেখকের রচনায় বিভিন্নভাবে বিবৃত হয়েছে। অ্যানি বেসান্ত সংখ্যাতত্ত্ব দিয়ে
হলওয়েল-এর বর্ণনাকে খণ্ডন করেছেন।
(iii) স্মৃতিভ্রম
: শিক্ষিত, অশিক্ষিত
বা অল্পশিক্ষিত ব্যক্তিগণ অধিকাংশ সময় তাদের স্মৃতিকথায় সঠিক তথ্য তুলে ধরতে পারেন
না। এক্ষেত্রে স্মৃতি প্রতারণা করে।
নানা ত্রুটি থাকা সত্ত্বেও ইতিহাসের উপাদান হিসেবে
স্মৃতিকথার গুরুত্ব সর্বাধিক। কারণ স্মৃতিকথা থেকে বাস্তব সত্য ঘটনার বিবরণ প্রত্যক্ষদর্শীদের
কাছ থেকে সরাসরি পাওয়া যায়।
Class-12 History chapter 2
উনবিংশ ও বিংশ শতকে উপনিবেশবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের প্রসার
১। সাম্রাজ্যবাদ কী?
ঊনবিংশ শতকের মাঝামাঝি সময় থেকে ইউরোপের বৃহৎ এবং শিল্পোন্নত দেশগুলি এশিয়া
এবং আফ্রিকায় উপনিবেশ স্থাপনের জন্য এক তীব্র প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হয়েছিল। এই ঘটনাই
সাম্রাজ্যবাদ নামে পরিচিত ছিল।
২।পুঁজিবাদ কী?
পুঁজিবাদ হল একটি বিশেষ অর্থনৈতিক ব্যবস্থা, যার মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা অতি
অল্পসময়ে অনেক বেশি পরিমাণে মুনাফা অর্জন করতে সমর্থ হয়।
৩। উপনিবেশবাদ’ বলতে কী বোঝ?
‘উপনিবেশবাদ’ বলতে বোঝায় কোনো অঞ্চলের অধিবাসীদের ওপর সাম্রাজ্যবাদী নীতি
অনুসরণকারী অন্য কোনো সার্বভৌম শক্তির শাসন প্রতিষ্ঠা।
৪। ক্যাপটেন কুক কোন্ কোন্ দেশ অবিষ্কার করেন?
ক্যাপটেন কুক অস্ট্রেলিয়া, হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জ, নিউজিল্যান্ড প্রভৃতি দেশ
আবিষ্কার করেন।
৫। পুঁজিবাদের প্রধান লক্ষণ কী?
পুঁজিবাদের প্রধান লক্ষ্য হল দুটি- (১) পণ্য উৎপাদনের উপায়গুলির ওপর ব্যক্তিগত
স্বত্বাধিকার এবং (২) ব্যক্তিগত লাভের জন্য পণ্য উৎপাদন।
৬। ধনতন্ত্রের বিকাশের
পর্যায়গুলি কী কী?
ধনতন্ত্রের বিকাশ চারটি পর্যায়ে সংঘটিত হয়েছিল—
(১) বাণিজ্যবাদী ধনতন্ত্র (2) শিল্পজাত ধনতন্ত্র
(৩) একচেটিয়া ধনতন্ত্র (৪) রাষ্ট্রীয় ধনতন্ত্র।।
৭। হবসন রচিত দুটি গ্রন্থের
নাম লেখো।
হবসন রচিত দুটি গ্রন্থ হল- “Imperialism – A Study এবং 'Economic
Interpretation of the Investment'l
৮। লেনিন-এর মতে সাম্রাজ্যবাদের বৈশিষ্ট্যগুলি কী কী?
লেনিন-এর মতে সাম্রাজ্যবাদের বৈশিষ্ট্যগুলি হল— (১) একচেটিয়া পুঁজিবাদ,
(২) পরোপজীবী পুঁজিবাদ, (৩) মুমূর্য পুঁজিবাদ। তার মতে, সাম্রাজ্যবাদ হল পুঁজিবাদের
এক ঐতিহাসিক ও সর্বোচ্চ স্তর।।
৯। লেনিন রচিত দুটি গ্রন্থের নাম লেখাে৷
লেনিন রচিত দুটি গ্রন্থ হল—
Imperialism – the Highest Stage of Capitalism' এবং 'Imperialism and the Split in Socialism
১০।সাম্রাজ্যবাদ সংক্রান্ত লেনিনের লেখা বইটির নাম কী ?
সাম্রাজ্যবাদ সংক্রান্ত লেনিনের লেখা বইটির নাম হল 'Imperialism: The
Highest Stage of Capitalism' !
১১। ওয়েলথ অব নেশনস গ্রন্থটির রচয়িতা কে ?
ওয়েলথ অব নেশনস গ্রন্থটির রচয়িতা
অ্যাডাম স্মিথ।
১২। কীভাবে চিনে সাম্রাজ্যবাদের
ক্ষেত্র তৈরি হয়েছিল ?
1842 খ্রিস্টাব্দে নানকিং সন্ধি
এবং 1858 খ্রিস্টাব্দে ৯ টিয়েনসিন-এর সন্ধি হওয়ার পর চিনে বিদেশিদের অবাধ অনুপ্রবেশ
ঘটে। এরপর থেকে চিনে সাম্রাজ্যবাদের ক্ষেত্র তৈরি হয়।
১৩। নয়া সাম্রাজ্যবাদ’ বা ‘নব্য সাম্রাজ্যবাদ’ বলতে কী বোঝো?
1870 খ্রিস্টাব্দের পর ইউরোপের
বৃহৎ জাতিগুলি ইউরোপের বাইরে উপনিবেশ দখলের জন্য এক তীব্র প্রতিযােগিতায় অবতীর্ণ হয়।
ফলে ইউরোপের বাইরের অনাবিষ্কৃত, কাঁচামাল সমৃদ্ধ এবং সম্ভাব্য বাজারযুক্ত দেশগুলি ইউরোপীয়
জাতিগুলির উপনিবেশে পরিণত হয়, এই সমগ্র প্রক্রিয়া ‘নয়া সাম্রাজ্যবাদ’ নামে পরিচিত।
১৪।মার্কেন্টাইল অর্থনীতির মূলকথা কী ছিল ?
মার্কেন্টাইল অর্থনীতির মূলকথা
ছিল অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণকে রাষ্ট্রের অধীনে নিয়ে আসতে হবে। এই প্রকার অর্থনীতিতে
রাষ্ট্রের স্বার্থ, বণিকের স্বার্থ এবং উৎপাদকের স্বার্থ অভিন্ন হয়ে ওঠে।
১৫।মার্কেন্টাইল কথাটি কবে, কে প্রথম ব্যবহার করেন ?
1776 খ্রিস্টাব্দে, ব্রিটিশ অর্থনীতিবিদ
অ্যাডাম স্মিথ তার 'Wealth of Nations' গ্রন্থে প্রথম মার্কেন্টাইল কথাটি ব্যবহার করেন।
১৬। চিনের প্রতি ইউরোপীয়
জাতিগুলির মূল লক্ষ্য কী ছিল?
চিনের প্রতি ইউরোপীয় জাতিগুলির
মূল লক্ষ্য ছিল। যে-কোনো অজুহাতে চিনকে উন্মুক্ত করে অবাধ বাণিজ্য | ও একচেটিয়া অধিকার
স্থাপন করা।
১৭। রক্ষণশীল সাম্রাজ্যবাদ
বলতে কী বোঝায় ?
যখন সাম্রাজ্যবাদকে নৈতিক উৎকর্ষের পরিচায়ক ও ঈশ্বরের সৃষ্ট বিষয় হিসেবে
দেখানো হয় এবং উন্নত রাষ্ট্রগুলির সামাজিক ব্যবস্থা নিরাপদ থাকে; তখন সেই
সাম্রাজ্যবাদ রক্ষণশীল হিসেবে বিবেচিত হয়।
১৮। হবসনের মতে, উপনিবেশ
দখলের মূল কারণ কী ছিল ?
ব্রিটিশ অর্থনীতিবিদ-ঐতিহাসিক জে এ হবসন মনে করেন নব-সাম্রাজ্যবাদের মূল
অর্থনৈতিক শিকড় হল। উপনিবেশ। এই উপনিবেশে লগ্নির জন্য বাড়তি মূলধন বিনিয়োগ করতে হয়।
এই বাড়তি মূলধনের চাপই উপনিবেশ দখলের মূল কারণ।
১৯। লেনিন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের
জন্য কোন্ কারণটি চিহ্নিত করেন ?
লেনিনের মতে যুদ্ধ হল পুঁজিবাদী
অর্থনীতির চূড়ান্ত পরিণতি। তিনি মনে করতেন, বিভিন্ন পুঁজিবাদী শক্তির উপনিবেশ দখলের
প্রতিদ্বন্দ্বিতাই প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কারণ ।
২০। লগ্নি পুঁজি কাকে বলে ?
বৃহদাকার শিল্পে বড়ো বড়ো উদ্যোগপতিরা
যে পুঁজি বা অর্থ লগ্নি করে মুনাফা অর্জন করে থাকে তাকে লগ্নি পুঁজি বলে।
২১। ‘হবসন-লেনিন তত্ত্ব’ বলতে কী বোঝায় ?
ব্রিটিশ অর্থনীতিবিদ তথা ঐতিহাসিক
জে এ হবসন মনে করতেন, পুঁজিপতি মালিকদের ‘মূলধনের পাহাড়' এবং উপনিবেশ দখলের জন্য বাড়তি
মূলধন সাম্রাজ্যবাদের মূল শিকড়। অন্যদিকে রুশ কমিউনিস্ট নেতা ভি আই লেনিন অনুরূপভাবে
পুঁজিবাদকে সাম্রাজ্যবাদের বীজ বলে অভিহিত করেন। সাম্রাজ্যবাদ ও উপনিবেশবাদ সম্পর্কে
তাদের এই মনোভাবই ‘হবসন-লেনিন তত্ত্ব’নামে
পরিচিত।
২২। সাম্রাজ্যবাদবলতে কী বোঝো?
শক্তিশালী রাষ্ট্রের দ্বারা দুর্বলতর রাষ্ট্রের ওপর রাজনৈতিক অর্থনৈতিক,
সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠাকে সাম্রাজ্যবাদ বলা হয়।
২৩। ঔপনিবেশিকতাবাদ
বলতে কী বোঝায় ?
কলোনি (Colony) শব্দ থেকে উপনিবেশ শব্দটির সৃষ্টি হয়েছে। ঔপনিবেশিকতাবাদ
হল জনসমাজের সেই স্থানান্তরিত অংশ যারা নিজেদের স্বার্থে অর্থনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে
অন্য কোনো দেশে উপনিবেশ স্থাপন করে ও শোষণ করে।
২৪। কোন্ সময়কালকে
এবং কেন দেশ আবিষ্কারের যুগ বলা হয় ?
পঞ্চদশ শতাব্দীতে পৃথিবীর নানা প্রান্ত আবিষ্কৃত হলে (Age of
discovery) উপনিবেশবাদের সূত্রপাত হয়। এই সময়ে ইউরোপের পর্যটকেরা পৃথিবীর বিভিন্ন
দেশে পাড়ি দিয়ে অজানা, অচেনা দেশ আবিষ্কার করে এবং সেগুলি আবিষ্কারক দেশের অধীনস্ত
হয়ে যায়। তাই এই সময়কালকে দেশ আবিষ্কারকের যুগ বলা হয়।।
২৫। কোন্ সময়কালকে এবং কেন সাম্রাজ্যবাদের যুগ বলা হয় ?
1870-1914 খ্রিস্টাব্দের মধ্যবর্তীকালীন
সময়ে ইউরোপীয় জাতিগুলি এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলিকে | নিজ নিজ উপনিবেশে পরিণত
করতে তৎপর হয়ে ওঠে। তাই এই সময়কালকে ‘সাম্রাজ্যবাদের যুগ বলা হয় ।
২৬। ‘আফ্রিকা কাড়াকাড়ি’ বলতে কী বোঝায় ?
187০ খ্রিস্টাব্দের পর থেকে সমগ্ৰা আফ্রিকায় নগ্ন সাম্রাজ্যবাদের প্রসার
ছিল লক্ষণীয়। আফ্রিকার স্থানীয় জাতীয়তাবাদকে সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করে ইউরোপীয়
সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলি নিজেদের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্বার্থে আফ্রিকা দখলে উন্মত্ত
হয়ে ওঠে। আফ্রিকাকে নিয়ে ইউরোপীয় শক্তিগুলির এই টানাপােড়েন 'আফ্রিকা। কাড়াকাড়ি
নামে পরিচিত।
২৭। আফ্রিকাকে কেন
‘অন্ধকারাচ্ছন্ন মহাদেশ’ বলা হয় ?
1870 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত আফ্রিকা
মহাদেশ ছিল প্রধানত অজ্ঞাত ও অনাবিষ্কৃত অঞ্চল। বহির্বিশ্বের সঙ্গে আফ্রিকার কোনো যোগাযোগ
ছিল না, এই জন্য আফ্রিকাকে ‘অন্ধকারাচ্ছন্ন মহাদেশ’ বলা হয়।
২৮। ত্রয়োদশ উপনিবেশ
বলতে কী বোঝো ?
সপ্তদশ শতকের শুরু থেকে ইংল্যান্ডের বহু মানুষ আমেরিকার বিভিন্ন ব্রিটিশ
উপনিবেশ সমূহে বসবাস করতে শুরু করে। কিন্তু অষ্টাদশ শতকের মধ্যবর্তী সময়কালের মধ্যে
আমেরিকায় অবস্থিত ওলন্দাজ ও ফরাসি শক্তিকে ব্রিটিশ বাহিনী পরাজিত করে এবং আধুনিক মার্কিন
যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলবর্তী অঞ্চলে ‘সর্বমোট তেরোটি।
0 Comments