অষ্টম শ্রেনির ইতিহাস প্রশ্নোত্তর Class 8 HISTORY WBBSE
Model Activity Task Class 8 |
এই উত্তরপত্র তৈরি করেছেন মেমারি ভি এম ইন্সটিটিউশন, ইউনিট- ওয়ান বিদ্যালয়ের ইতিহাসের শিক্ষক মাননীয় মানস কুমার রায়। যেকোন প্রশ্নের উত্তরের জন্য স্যারের সাথে যোগাযোগ করা যাবে। whatsapp No- 9734601344
Model Activity Task Class 8 History
মডেল
অ্যাক্টিভিটি টাস্ক-২০২১ (September-2021)
অষ্টম
শ্রেণি ইতিহাস। পূর্ণ মান-১৮
১.
সঠিক তথ্য দিয়ে নীচের ছকটি পূরণ করাে :১ X ৬ = ৬
প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠাতা সময়কাল
জমিদার
সভা দ্বারকা নাথ ঠাকুর ১৮৩৮
ভারত
সভা সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ১৮৭৬
ইন্ডিয়ান
লিগ শিশির কুমার ঘোষ ১৮৭৫
২.
সত্য বা মিথ্যা নির্ণয় করো : ১X ৩= ৩
২.১ ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে
লর্ড নর্থব্রুক জারি করেন নাট্যাভিনয়
নিয়ন্ত্রণ আইন। সত্য
২.২ ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের
১৬ অক্টোবর বাংলা বিভাজনের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করা হয়। সত্য
২.৩ পাঞ্জাবে লালা
লাজপত রাই-এর নেতৃত্বে
শিবাজি উৎসব চালু হয়।
মিথ্যা
৩.
সংক্ষেপে উত্তর দাও (৩০-৪০টি শব্দ) : ২ X ২ = ৪
৩.১ অর্থনৈতিক জাতীয়তাবাদ
কী?
উত্তর-
৩.২ ইলবার্ট বিলকে
নিয়ে কেন বিতর্কের সূচনা
হয়েছিল?
উত্তর-
৪. নিজের ভাষায় লেখো (১২০-১৬০টি শব্দ) : ৫ x১ = ৫
বিশ
শতকের প্রথম দিকে বাংলায় গড়ে
ওঠা বিভিন্ন গুপ্ত সমিতির পরিচয় দাও।
উত্তর-
------------------------------------------------------------------------------------------------------------পন্ডিতা রমা বাঈ স্মরণীয় কেন 👈Click Here
মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক- August-2021
ইতিহাস অষ্টম শ্রেণি
১. সঠিক শব্দ বেছে
নিয়ে শূন্যস্থান পূরণ করো :
(ক) ১৭১৭ খ্রিষ্টাব্দে
---------কে বাংলার নাজিম পদ দেওয়া হয়
(মুর্শিদকুলি খান/সাদাৎ
খান /আলিবর্দি খান)।
(খ)
১৭২২ খ্রিষ্টাব্দে ------এর নেতৃত্বে অযোধ্যা
এবং স্বশাসিত আঞ্চলিকশক্তি হিসাবে গড়ে ওঠে(নিজাম-উল-মুলসাদাৎ খান/সফদর
জং)।
(গ)
১৭২৪ খ্রিষ্টাব্দে হায়দ্রাবাদ রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন (ফররুখশিয়র / নিজাম-উল-মুলক/সাদাৎ
খান)।
২. সঠিক তথ্য দিয়ে
নিচের ছকটি পূরণ করো
:
সন্ধি চুক্তি |
সময়কাল |
স্বাক্ষরকারী |
ফলাফল |
সলবাই |
১৭৮২ |
কম্পানির সঙ্গে মারাঠা |
কোম্পানির সঙ্গে মারাঠা দের সম্পর্ক
ভাল হয়। কোম্পানি বিরোধী শক্তিশালী জোট ভেঙে যায়। |
বেসিন |
১৮০২ |
পেশোয়া ২য় বাজিরাও এর সাথে কোম্পানি।
|
পেশোয়ার দরবারে ব্রিটিশ রেসিডেন্ট বসানো
হয়। |
লাহোর |
১৮৪৬ |
ইংরেজ দের সাথে শিখদের। |
জলন্ধর দোয়াব অঞ্চলে ব্রিটিশ কতত্ব
প্রতিষ্ঠিত হয়। |
৩. সংক্ষেপে উত্তর দাও (৩০-৪০টি
শব্দ) :
(ক)
কে, কি উদ্দেশ্যে সিভিল সার্ভিস চালু করেন?
উত্তর- কাম্পানি-প্রশাসনের
অধীনে আমলাতন্ত্রকে সংগঠিত করার উদ্দেশ্যে লর্ড কর্নওয়ালিস সিভিল সার্ভিস বা অসামরিক
প্রশাসন ব্যবস্থা চালু করেন। ভারতের ব্রিটিশ প্রশাসনকে দুর্নীতিমুক্ত করার উদ্দেশ্য
ছিল কর্নওয়ালিসের। তার ধারণা ছিল, উপযুক্ত
বেতন না পাওয়ার ফলেই কোম্পানির কর্মচারীরা সততা ও দক্ষতার বা সঙ্গে কাজ করে না। ফলে
কর্নওয়ালিস আইন জারি করে কোম্পানি-প্রশাসনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত ব্যবসা ও কোনো
রকম উপহার নেওয়া বন্ধ করে দেন। তার পাশাপাশি চাকরির মেয়াদের ভিত্তিতে সিভিল সার্ভেন্টদের
পদোন্নতির ব্যবস্থা চালু করেন কর্নওয়ালিস। অবশ্যই প্রশাসনের কর্মচারীদের বেতনও বাড়িয়ে
দেন তিনি। লর্ড কর্নওয়ালিসের সময় থেকেই সিভিল সার্ভিসে ভারতীয়দের নিয়োগ করা বন্ধ
হয়। লর্ড ওয়েলেসলি ইউরােপীয় প্রশাসকদের
ভালোমত প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য উদ্যোগ নিয়েছিলেন।
সেজন্য ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় ফোর্ট উইলিয়ম কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়
(খ)
ব্যাপটিস্ট মিশন শিক্ষার প্রসারে কেমন ভূমিকা পালন করেছিল?
উত্তর- ১৮০০
খ্রিস্টাব্দে ফোর্ট উইলিয়ম কলেজের পাশাপাশি শ্রীরামপুরে ব্যাপটিস্ট মিশন স্থাপন করা
হয়েছিল। শ্রীরামপুরের মিশনারিরা ব্রিটিশ কোম্পানির তরফে শিক্ষা বিস্তারের বিভিন্ন
উদ্যোগে সামিল হন। নিজেদের মুদ্রণযন্ত্র বসিয়ে তারা বাংলা ভাষায় বিভিন্ন লেখা ছাপাতে
শুরু করেন। শ্রীরামপুরের মিশনারিদের মধ্যে সবথেকে উল্লেখযোগ্য ছিলেন উইলিয়ম কেরি।
তিনি ভারতীয় - মহাকাব্যগুলি ইংরেজি ভাষায় অনুবাদ করেন। তাছাড়া বাইবেলের একটি অংশকে
বিভিন্ন ভারতীয় ভাষায় অনুবাদ করেছিলেন কেরি। ১৭৭৮ খ্রিস্টাব্দে। হালেদের লেখা বাংলা
ব্যাকরণ বিষয়ক বইটিকেও সম্পাদনা করে প্রকাশ করেছিলেন কেরি।
৪.
নিজের ভাষায় লেখো (১২০ - ১৬০ টি শব্দ) :
জমি
জরিপ ও রাজস্ব নির্ণয়ের
ক্ষেত্রে ঔপনিবেশিক প্রশাসন কী কী পদক্ষেপ
নিয়েছিল?
উত্তর- ভারতে ঔপনিবেশিক প্রশাসন রাজস্ব ব্যবস্থা বিষয়ে নানারকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছিল। তার মধ্যে জমি জরিপ করা ও তার ভিত্তিতে রাজস্ব নির্ণয় করার প্রক্রিয়াটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
জমি জরিপের পদক্ষেপ
১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দে পলাশির যুদ্ধের পর বাংলার নতুন নবাব মির জাফরের থেকে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কলকাতা থেকে কুলপি পর্যন্ত ২৪টি পরগনার জমিদারি পায়। তখন রবার্ট ক্লাইভ নতুন জমিদারি মাপজোকের জন্য একদল জরিপবিদের খোঁজ করতে থাকেন। অবশেষে ১৭৬০ খ্রিস্টাব্দে ফ্র্যাকল্যান্ড নতুন ২৪ পরগনার জমি জরিপের কাজ শুরু করেন। তবে কাজ শেষ হওয়ার আগেই ফ্র্যাঙ্কল্যান্ড মারা যান। তার কাজ শেষ করেন হগ ক্যামেরন।
১৭৬৪ খ্রিস্টাব্দে বাংলার নদীপথগুলি জরিপ করেন জেমস রেনেল। তাঁকেই ১৭৬৭ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ কোম্পানি ভারতের সার্ভেয়ার জেনারেল বা জরিপ বিভাগের প্রধান হিসাবে নিয়োগ করে। বাংলার নদীপথগুলি জরিপ করে রেনেল মোট ১৬টি মানচিত্র তৈরি করেছিলেন। সেই প্রথম সেই আমলের বাংলার নদী-গতিপথের মানচিত্র বানানো হলো।
রাজস্ব নির্ণয়ের পদক্ষেপ
বক্সারের যুদ্ধের (১৭৬৪ খ্রি:) পর ও দেওয়ানির অধিকার পাওয়ার ফলে ক্রমেই বাংলার জমি জরিপ করে রাজস্ব নির্ণয় বিষয়ে কোম্পানি তৎপর হয়ে ওঠে। ১৭৭০ খ্রিস্টাব্দে মুর্শিদাবাদে কম্পট্রোলিং কাউন্সিল অভ রেভেনিউ নামের একটি কমিটি গঠন করা হয়। তাছাড়া আরো একটা আলাদা রেভেনিউ বোর্ড তৈরি করা হলো। তার নাম কমিটি অভ রেভেনিউ। ১৭৮৬ খ্রিস্টাব্দে কমিটি অভ রেভেনিউকে নতুন করে সাজিয়ে তার নাম দেওয়া হয় বোর্ড অভ রেভেনিউ। সেই থেকে ঐ নতুন বোর্ড অফ রেভেনিউই রাজস্ব সংক্রান্ত বিষয় দেখাশোনা করতে থাকে।
মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক- ২০২১
ইতিহাস অষ্টম শ্রেণি
১.
‘ক’ স্তম্ভের
সাথে ‘খ’ স্তম্ভ মেলাও :
ক –
স্তম্ভ খ - স্তম্ভ
১.১ আবওয়াব (ক) মহাজন
১.২ সাহুকার (খ) অগ্রিম অর্থ
১.৩ দাদন (গ) কৃষক
১.৪ রায়ত (ঘ)
বেআইনি কর
উত্তর- ১.১- ঘ। ১.২- ক। ১.৩- খ। ১.৪- গ
২.
সঠিক তথ্য দিয়ে নীচের ছকটি পূরণ করো :
বিদ্রোহ একজন
নেতার নাম কারন
(যে কোনো একটি)।
নীল
বিদ্রোহ বিষ্ণুচরন বিশ্বাস দাদন প্রথা
বারাসাত
বিদ্রোহ তিতুমির জমিদারদের অত্যাচার
সাঁওতাল
বিদ্রোহ সিধু দিকুদের অত্যাচার
মুণ্ডা
বিদ্রোহ বিরসা মুন্ডা খুঁৎ কাঠি প্রথার অবসান
৩.
সংক্ষেপে উত্তর (৩০ - ৪০ টি শব্দ)
৩.১ পণ্ডিতা রমাবাঈ
কেন স্মরণীয়?
উত্তর- উনিশ শতকে নারীশিক্ষাকে কেন্দ্র করে বেশ কিছু নারীও উদ্যোগী হয়েছিলেন। এদের মধ্যে পশ্চিম ভারতেপণ্ডিতা রমাবাঈ, মাদ্রাজে ভগিনী শুভলক্ষ্মী ও বাংলায় বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন বিশেষ উল্লেখযোগ্য। উনিশ শতকের দ্বিতীয়ভাগে ব্রিটিশ প্রশাসন মেয়েদের শিক্ষার আওতায় আনার জন্য বিভিন্ন অনুদান ও বৃত্তি দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিল। তার ফলে নারীশিক্ষার কিছুটা বিকাশ ঘটে। | পণ্ডিতা রমাবাঈ ছিলেন ব্রাহ্মণ পরিবারের মেয়ে। প্রাচীন ভারতীয় শাস্ত্র বিষয়ে তার পড়াশোনা ছিল। সমস্ত সামাজিক বাধা নস্যাৎ করে তিনি এক শূদ্রকে বিয়ে করেন। পরে বিধবা অবস্থায় নিজের মেয়েকে নিয়ে ইংল্যন্ডে গিয়ে ডাক্তারি পড়েন। রমাবাঈ বিধবা মহিলাদের জন্য একটি আশ্রম তৈরি করেছিলেন। তবে রমাবাঈয়ের উদ্যোগকে রক্ষণশীলদের অনেকেই সমালোচনা করেছিলেন।
৩.২ ইয়ং বেঙ্গল
দলের দুটি সীমাবদ্ধতার উল্লেখ
করো।
উত্তর- ইয়ংবেঙ্গল বা নব্যবঙ্গ দলের সীমাবদ্ধতা গুলি হল-
১।সাধারণ
মানুষের সাথে সংযোগের অভাবঃ নব্যবঙ্গ
আন্দোলনের সঙ্গে সমাজের সাধারণ মানুষের যোগ ছিল, না
বললেই চলে। এই আন্দোলন
সীমাবদ্ধ ছিল সমাজের ওপরতলার
শিক্ষিত ও সম্ভ্রান্ত মানুষজনদের
মধ্যে।
২। ব্রিটিশ বিরোধী মনোভাবের অভাব: নব্যবঙ্গীয়রা এদেশীয় মানুষদের প্রতি ব্রিটিশ সরকারের শােষণের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিবাদ করেনি।
ভারতের বিভিন্ন দিকে যখন কৃষকরা
সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে, তখন নব্যবঙ্গীয়রা কৃষকদের
আন্দোলন সম্পর্কে উদাসীন ছিলেন।
৩। পাশ্চাত্য সংস্কৃতির প্রতি অন্ধ বিশ্বাস: নব্যবঙ্গীয় নেতারা পাশ্চাত্য সংস্কৃতির সব কিছু অন্ধের
মতাে অনুসরণ করেছিল। তাদের কাছে প্রাচ্যের সবকিছুই
ছিল খারাপ। এজন্য ড. অমলেশ ত্রিপাঠী
এঁদের ‘নকলনবীশের দল’ বলে ব্যঙ্গ
করেছেন।
৪। ডিরোজিয়ানদের
বয়ঃপ্রাপ্তি:
এই আন্দোলন বেশিদিন মানুষের মনে রেখাপাত করেনি।
কারণ, নব্যবঙ্গ গোষ্ঠীর নেতাদের বয়স বাড়ার সঙ্গে
সঙ্গে এই আন্দোলনের গতি
স্তিমিত হয়ে পড়ে।
৪. নিজের ভাষায় লেখা (১২০ - ১৬০টি শব্দ) :
'সম্পদের
বহির্গমন’ বলতে
কী বোঝো?
উত্তর- পলাশির যুদ্ধের পর থেকে উপনিবেশ হিসেবে ভারতের সম্পদকে ব্রিটেনে নানা ভাবে স্থানান্তরিত করা হতো। তার প্রতিদানে অবশ্য ভারতে অর্থনৈতিক উন্নয়ন হতনা। এই ভাবে দেশের সম্পদ বিদেশে চালান হওয়াকেই সম্পদের বহির্গমন বলা হয়।
প্রশ্ন-১ অষ্টাদশ শতকে মুঘল শাসন কাঠামো বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছিল। এই বিপর্যয়ের কারনগুলো তুমি কীভাবে ব্যাখ্যা করবে?
উত্তর- ১৫২৬
খ্রিস্টাব্দে বাবর মুঘল সাম্রাজ্যের
যে ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ১৭০৭ খ্রিস্টাব্দে ঔরঙ্গজেবের
মৃত্যুর পর থেকে সেই
মুঘল সাম্রাজ্য দ্রুত অবনতির দিকে এগিয়ে যায়
এবং পরবর্তী ৫০ বছরের মধ্যে
মুঘল সম্রাটগণ নামমাত্র শাসকে পরিণত হন।
* মুঘল সাম্রাজ্যের অবনতির কারণ :
মুঘল
সাম্রাজ্যের অবনতির কারণগুলি হল—
ঔরঙ্গজেবের
পরবর্তী সম্রাটদের অযোগ্যতা : সম্রাটের দক্ষতার উপর মুঘল সাম্রাজ্যের
সাফল্য নির্ভরশীল ছিল। সম্রাট জাহাঙ্গির
ও শাহ জাহানের সময়
থেকে মুঘল শাসনকাঠামোর মধ্যে
সমস্যা দেখা দিয়েছিল। ঔরঙ্গজেবের
শেষ দিকে তা আরও
স্পষ্ট হয়েছিল। ঔরঙ্গজেবের পরবর্তী সম্রাটদের অযােগ্যতার জন্য মুঘল সাম্রাজ্যের
দ্রুত অবনতি হয়েছিল।
জায়গিরদারি
ও মনসবদারি সংকট : মুঘল আমলে মনসবদারদের
জায়গির দেওয়া হত। উন্নতমানের জায়গির
পাওয়ার আশায় মনসবদারদের মধ্যে ক্রমে চরম দলাদলি শুরু
হয়। সম্রাট জাহাঙ্গিরের সময় থেকেই জায়গিরদারি
সংকট সৃষ্টি হয়েছিল। তখন ভূমি রাজস্বের
হিসাবে নানা গরমিল দেখা
দেয়। সরকারি হিসাবে যে পরিমাণ রাজস্ব
পাওয়ার কথা (জমা) আর
যা পাওয়া যেত (হাসিল) তার
মিল থাকত না। সম্রাট
ঔরঙ্গজেব ও তার পরবর্তীকালে
এই সংকট তীব্র আকার
ধারণ করে। জায়গিরের সংকট
মুঘল সাম্রাজ্যের ভিত নড়িয়ে দিয়েছিল।।
আঞ্চলিক
বিদ্রোহ: বিভিন্ন অঞলের জমিদার ও কৃষকদের বিদ্রোহ
মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের অন্যতম প্রধান কারণ ছিল। মুঘল
যুগে জমির উপর জায়গিরদারদের
অধিকার স্থায়ী ছিল না। জায়গিরদারদের
বিভিন্ন জায়গায় বদলি করা হত।
ফলে জায়গিরদাররা কৃষকদের কাছ থেকে অত্যধিক
হারে রাজস্ব আদায় করত। এতে কৃষকদের
উপর শােষণ ও অত্যাচার বাড়ত।
মুঘল যুগের উল্লেখযোগ্য কৃষক বিদ্রোহগুলি হল
জাঠ, শিখ ও সৎনামী
বিদ্রোহ।
শিবাজী ও মারাঠাদের আক্রমণ :শিবাজী ও মারাঠাদের আক্রমণ
মুঘল শাসনকে ব্যতিব্যস্ত করেছিল। ঔরঙ্গজেব মারাঠাদের দমন করার জন্য
তার জীবনের শেষ ছাব্বিশ বছর
দাক্ষিণাত্যে কাটিয়েছিলেন। কিন্তু তাতেও সাফল্য পাননি।
বৈদেশিক আক্রমণ :নাদির শাহের নেতৃত্বে পারসিক আক্রমণ (১৭৩৮-৩৯ খ্রি.)
এবং আহমদ শাহ আবদালির
নেতৃত্বে আফগান আক্রমণ (১৭৫৬-৫৭ খ্রি.)
মুঘল সাম্রাজ্যের উপর চরম আঘাত
হানে। ফলে মুঘলদের পক্ষে
আর ফিরে দাঁড়ানাে সম্ভবপর
হয়নি।
* মূল্যায়ন : উত্থান পতন প্রকৃতির নিয়ম হলেও মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের ক্ষেত্রে এই কারণগুলি * দায়ী ছিল। জাতীয়তাবােধের অভাব, আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির পরিবর্তন রাজনীতিতে গভীর প্রভাব বিস্তার করে। যােগ্য কর্মচারী বা আমলাশ্রেণির দক্ষতা দেখা যায়নি। ফলে মুঘল সাম্রাজ্য অবক্ষয়ের পথে দ্রুত এগিয়ে যায়।।
২। জমি জরিপ
ও রাজস্ব নির্ণয়ের ক্ষেত্রে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির পদক্ষেপ গুলির একটি তালিকা
তৈরি করো।
উত্তর- ভারতে
ঔপনিবেশিক প্রশাসন রাজস্ব ব্যবস্থা বিষয়ে নানারকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছিল। তার মধ্যে
জমি জরিপ করা ও তার ভিত্তিতে রাজস্ব নির্ণয়
করার প্রক্রিয়াটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
জমি জরিপের
পদক্ষেপ
১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দে
পলাশির যুদ্ধের পর বাংলার নতুন নবাব মির জাফরের থেকে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি
কলকাতা থেকে কুলপি পর্যন্ত ২৪টি পরগনার জমিদারি পায়। তখন রবার্ট ক্লাইভ নতুন জমিদারি
মাপজোকের জন্য একদল জরিপবিদের খোঁজ করতে থাকেন। অবশেষে ১৭৬০ খ্রিস্টাব্দে ফ্র্যাকল্যান্ড
নতুন ২৪ পরগনার জমি জরিপের কাজ শুরু করেন। তবে কাজ শেষ হওয়ার আগেই ফ্র্যাঙ্কল্যান্ড
মারা যান। তার কাজ শেষ করেন হগ ক্যামেরন।
১৭৬৪ খ্রিস্টাব্দে বাংলার নদীপথগুলি জরিপ করেন
জেমস রেনেল। তাঁকেই ১৭৬৭ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ কোম্পানি ভারতের সার্ভেয়ার জেনারেল
বা জরিপ বিভাগের প্রধান হিসাবে নিয়োগ করে। বাংলার নদীপথগুলি জরিপ করে রেনেল মোট
১৬টি মানচিত্র তৈরি করেছিলেন। সেই প্রথম সেই আমলের বাংলার নদী-গতিপথের মানচিত্র
বানানো হলো।
রাজস্ব নির্ণয়ের
পদক্ষেপ
বক্সারের যুদ্ধের (১৭৬৪ খ্রি:) পর ও দেওয়ানির অধিকার
পাওয়ার ফলে ক্রমেই বাংলার জমি জরিপ করে রাজস্ব নির্ণয় বিষয়ে কোম্পানি তৎপর হয়ে
ওঠে। ১৭৭০ খ্রিস্টাব্দে মুর্শিদাবাদে কম্পট্রোলিং কাউন্সিল অভ রেভেনিউ নামের
একটি কমিটি গঠন করা হয়। তাছাড়া আরো একটা আলাদা রেভেনিউ বোর্ড তৈরি করা হলো। তার নাম
কমিটি অভ রেভেনিউ। ১৭৮৬ খ্রিস্টাব্দে কমিটি অভ রেভেনিউকে নতুন করে সাজিয়ে তার
নাম দেওয়া হয় বোর্ড অভ রেভেনিউ। সেই থেকে ঐ নতুন বোর্ড অফ রেভেনিউই রাজস্ব
সংক্রান্ত বিষয় দেখাশোনা করতে থাকে।
৩। উপযুক্ত
তথ্য দিয়ে নীচের ছকটি পূরণ করো-
|
অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি |
স্বত্ববিলোপ নীতি |
গভর্নর জেনারেল |
লর্ড ওয়েলেসলি |
লর্ড ডালহৌসি |
সময়কাল |
|
|
প্রভাবিত রাজ্য |
১ হায়দ্রাবাদ ২ মহারাষ্ট্র |
১ সাতারা ২ ঝাঁসি |
মূল নীতি |
১ যে রাজ্য এই নীতিতে স্বাক্ষর করবে
তার নিরাপত্তার দায়িত্ব ব্রিটিশ গ্রহণ করবে।
২ এই নীতিতে স্বাক্ষরকারী রাজ্যে একদল
ব্রিটিশ সেনা মোতায়েন থাকবে। সেই সেনাদলের ব্যয় ভার বহন করবে ওই রাজ্যটি |
১ কোন দেশীয় রাজ্যের রাজা অপুত্রক অবস্থায়
মারা গেলে সেই রাজ্যটি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যভুক্ত হবে।
২ কোন দত্তক পুত্র স্বীকার করা হবেনা।
|
-----------------------------------------------------------------------------------------------------
মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক
পরিবেশ ও ইতিহাস
অষ্টম শ্রেনি
অধ্যায়-
১। আঞ্চলিক শক্তির উত্থান
২।ঔপনিবেশিক কর্তত্ব প্রতিষ্ঠা
প্রশ্ন- দেওয়ানি
অধিকার, দ্বৈত শাসন ব্যবস্থা ও ছিয়াত্তরের মন্বন্তর কীভাবে একে অপরের সাথে সম্পর্কযুক্ত
ছিল?
উত্তর-১৭৬৪ সালে বক্সারের যুদ্ধে জয়লাভের পর ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ১৭৬৫ সালে মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলমের কাছ থেকে বাংলা- বিহার ও উড়িষ্যার দেওয়ানি বা রাজস্ব আদায়ের অধিকার লাভ করে।যে চুক্তির মাধ্যমে কোম্পানি এই অধিকার লাভ করে তা হল দ্বিতীয় এলাহাবাদ এর চুক্তি- ১৭৬৫। এই চুক্তি অনুসারে কোম্পানি রাজস্ব আদায়ের অধিকার লাভ করল এবং নবাব কে আইন শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব দেওয়া হল। এই দেওয়ানি লাভের মধ্যে দিয়ে বাংলায় এক নতুন ধরনের শাসন ব্যবস্থা চালু হয় এর নাম দ্বৈত শাসন ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থা অনুসারে কোম্পানির পায় দায়িত্ব হীন ক্ষমতা এবং নবাবের হাতে থাকে ক্ষমতা হীন দায়িত্ব। কোম্পানির হাতে কোন দায়িত্ব না থাকায় তাঁরা রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে নিদারুন শোষণ চালাল। কারণ তাদের মূল লক্ষ্য ছিল যত বেশী সম্ভব রাজস্ব আদায় করে নিজেদের সম্পদ বৃদ্ধি করা। এর ফলে দেওয়ানি লাভের মাত্র ৫ বছরের মধ্যে ১৭৭০ সালে বাংলায় এক ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দিল। বাংলা ১১৭৬ বঙ্গাব্দে এই দুর্ভিক্ষ হয়েছিল বলে একে ছিয়াত্তরের মন্বন্তর বলা হয়। এই ভাবে দেওয়ানি অধিকার, দ্বৈত শাসন ব্যবস্থা ও ছিয়াত্তরের মন্বন্তর একে অপরের সাথে সম্পর্কযুক্ত ছিল।
প্রশ্ন নির্ভুল তথ্য দিয়ে ফাঁকা ঘরগুলি পূরণ করো।
উদ্যোগ |
প্রশাসক |
অন্যান্য উদ্যোগ |
১৭৭৩ থেকে ১৭৮১ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে
দেওয়ানি বিচার ব্যবস্থার কয়েকটি পরিবর্তন ঘটে। |
ওয়ারেন হেস্টিংস |
১। বিচার বিভাগের সমস্ত আদেশ লিখে রাখার
ব্যবস্থা হয়। ২। হিন্দু আইনগুলির সার সংকলন তৈরি
হয়। |
দেওয়ানি সংক্রান্ত বিচার ও রাজস্ব আদায়ের
দায়িত্ব আলাদা করা হয় |
লর্ড কর্নওয়ালিস |
১। আদালত ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজান। ২। নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ
আদালতে আপিলের অধিকার স্বীকার করা হয়। |
প্রসাসনিক ব্যয় কমাতে চেয়েছিলেন |
উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক |
১। এলাহাবাদ ও বারানসি অঞ্চলে মহল ওয়াড়ি
ব্যবস্থা চালু করেন। ২। ঠগি দস্যুদের দমনে ব্যবস্থা গ্রহণ
করেন। |
1.
বেনারস
সংস্কৃত কলেজের প্রতিষ্ঠাতা- জোনাথান ডানকান
2.
যার
প্রস্তাব অনুযায়ী তিনটি প্রেসিডেন্সিতে তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল-চার্লস
উড
3.
সুপ্রিম
কোর্টের প্রধান বিচারপতি , হিন্দু কলেজ তৈরির সাথে যুক্ত ছিলেন- এডওয়ার্ড হাইড ইস্ট
4.
কলকাতা
মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন-ওয়ারেন হেস্টিংস
5.
১৮০০
খ্রিস্টাব্দে শ্রীরামপুরে প্রতিষ্ঠিত একটি সংস্থা- ব্যাপ্টিস্ট মিশন
হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, অন্যতম শিক্ষা অনুরাগী- ডেভিড হেয়ার
----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------অষ্টম শ্রেনি ইতিহাস নবম অধ্যায় 👈Click
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
প্রশ্ন- পলাশির যুদ্ধ ও বক্সারের যুদ্ধের মধ্যে কোনটি ব্রিটিশ কোম্পানির ক্ষমতা বিস্তারের জন্য
বেশী গুরুত্বপূর্ণ ছিল? তোমার বক্তব্যের পক্ষে যুক্তি দাও।
সামগ্রিক
ফলাফল ও গুরুত্বের বিচারে
পলাশি যুদ্ধের তুলনায় বক্সারের যুদ্ধ ভারতে কোম্পানির আধিপত্য প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
ভারতে ব্রিটিশ কোম্পানির ক্ষমতা বিস্তারে বক্সারের যুদ্ধের গুরত্ব : ভারতে ব্রিটিশ কোম্পানির ক্ষমতা বিস্তারের ক্ষেত্রে বঙ্গরের যুদ্ধের গুরুত্ব অপরিসীম। ঐতিহাসিক স্মিথ বলেছেন যে, “পলাশির যুদ্ধ
ছিল কয়েকটি কামানের লড়াই, কিন্তু বক্সারের যুদ্ধ ছিল চুড়ান্ত বিজয়।”
১।ভারতে
ব্রিটিশ কোম্পানির ক্ষমতা বৃদ্ধি : বক্সারের যুদ্ধে কোম্পানির কাছে পরাজিত হয়েছিলেন
বাংলার নবাব মির কাশিম,
অযােধ্যার নবাব সুজা উদ-দৌলা এবং ভারতের
মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলম। ফলে
ভারতের রাজনীতিতে কোম্পানির ক্ষমতা ও মর্যাদা বহুগুণ
বৃদ্ধি পায়।
২।কোম্পানির দেওয়ানি লাভ : বক্সারের যুদ্ধে জয়লাভের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফল ছিল কোম্পানির
দেওয়ানি লাভ। বক্সারের যুদ্ধের
সুবিধা লাভ করার জন্য
বাংলার গভর্নর লর্ড ক্লাইভ ১৭৬৫
খ্রিস্টাব্দের ১২ আগস্ট মুঘল
সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলমের সঙ্গে
এলাহাবাদের সন্ধি স্বাক্ষর করেন। এই সন্ধিতে বছরে
২৬ লক্ষ টাকা সম্রাটকে
দেওয়ার বিনিময়ে কোম্পানি সুবা বাংলার দেওয়ানি
অধিকার লাভ করে। ৩।বাংলায়
কোম্পানির কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা :বক্সারের যুদ্ধে জয়লাভের ফলে বাংলার নবাবের
উপর কোম্পানি পূর্ণ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছিল, বাংলার নবাব নামমাত্র শাসকে
পরিণত হয়েছিলেন।
৪।ইংরেজ
বাহিনীর মর্যাদা বৃদ্ধি ও শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠা বক্সারের যুদ্ধে জয়লাভ করার ফলে ভারতে
ইংরেজ বাহিনীর শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণিত হয়েছিল। ফলে তাদের মর্যাদা
বৃদ্ধি পেয়েছিল।
এইভাবে ক্রমশ ভারতে বণিকের মানদণ্ড রাজদণ্ডে পরিণত হয়।
অষ্টম শ্রেনির ইতিহাসঃ অধ্যায় ভিত্তিক ভিডিও ক্লাস 👈Click here
0 Comments