ল্যাপটপ কেনার সময় আমরা দোকানে গিয়ে বলি 4 GB RAM, 1 TB হার্ডডিস্ক i3 প্রসেসর দিন। কিন্তু তাকে যখন দোকানদার জিজ্ঞেস করে কী RAM দেব দাদা? তিনি অবাক হয়ে তাকিয়ে বলেন ওই যে বললাম ৪ GB। দোকানদার বুঝতে পেরে হাসি চেপে আবার জখন জিজ্ঞেস করেন ssd লাগবে নাকি দাদা? আবার তিনি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করেন এটা কি জিনিস? গ্রাফিক্স? হা গ্রাফিক্স লাগবে ২ GB হলে ভাল হয়। দোকানদারকে হাসির সুযোগ না দিয়ে কেনার পরে যাতে আপনাকে পস্তাতে না হয় সেজন্য ল্যাপটপ কেনার সময় কিছু বিষয় জেনে রাখা দরকার।
আমরা সব সময় ভাল কনফিগারেশনের ল্যাপটপ বা কম্পিউটার কিনি তার কারন ভাল পারফরম্যান্স পাব বলে। তাই সবার আগে আমাদের জানতে হবে একটি ল্যাপটপের পারফরম্যান্স কোন কোন বিষয়ের উপর নির্ভর করে।
মুলত এই পাঁচটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে একটি ল্যাপটপের পারফরম্যান্স।
প্রসেসর সাধারণত ২টি কোম্পানির জনপ্রিয়। একটি ইন্টেল আরেকটি এএমডি। ইন্টেল এর প্রসেসর গুলি হল পেন্তিয়াম,সেলেরন, আই-৩, আই-৫, আই-৭, আই-৯ এবং এএমডি প্রসেসরের ভ্যারিয়েন্ট গুলি হল এএমডি-এ, এফ এক্স, রাইজেন। প্রসেসর হিসেবে ইন্টেল এর দাম বেশি এএমডি র কম। RAM সাধারণত ২ ধরেনের হয়। DDR3 & DDR4 প্রথমটি (DDR3)সস্তা এবং ধীর গতির তুলনায় DDR4 দ্রুত গতির এবং দাম অবশ্যই বেশি। অনেকে বলেন আমি ৮ জিবি র্যাম লাগিয়েছি তাও ল্যাপটপ স্লো চলছে। আসলে তিনি DDR3 নিয়েছেন তাই পারফরম্যান্স কম।
ইন্টারন্যাল মেমোরি বলতে আমরা এতদিন বুঝতাম হার্ড ডিস্ক ড্রাইভ (HDD) । কিন্তু এই ড্রাইভে অপারেটিং সিস্টেম যে স্পিডে কাজ করতে পারে তার থেকে অনেক দ্রুত গতির ড্রাইভ হল সলিড স্টেট ড্রাইভ (SSD) কিন্তু সমস্যা হল SSDর দাম অনেক বেশি। তাই একদিকে দাম এর সাথে সমঝোতা অন্যদিকে পারফরম্যান্স ভাল করা এই দুই এর সমাধান হল ইন্টারন্যাল মেমোরির কিছুটা SSD আর কিছুটা HDD নেওয়া। SSDতে শুধু অপারেটিং সিস্টেম রান করবে। আর HDDটা স্টোরেজ হিসেবে কাজ করবে। এই নতুন কম্বিনেশন এর নাম SSHD.
যারা গেম খেলেন বা মাল্টি মিডিয়ার কাজ করেন তাদের গ্রাফিক্স কার্ড ও দেখে নিতে হবে প্রয়োজন মত। এর ২ টি মূল কোম্পানি আছে একটি NVIDIA আর একটি AMD। একটি দাম বেশি আর একটি দাম কম।
সব শেষে দেখে নেওয়া দরকার ব্যাটারি কত ওয়াটের। কতক্ষণ ব্যাকাপ দেবে। ওয়ারেন্টই কত দিনের ইত্যাদি।
আপনার প্রয়োজন মত কনফিগারেশন চয়েস করার পর আপনাকে ব্যান্ড ও মডেল অনুসারে দাম চেক করে ফাইনাল মডেল সিলেক্ট করতে হবে। আপনার হাতে কেনার সময় টাকা কম থাকলে আপনি র্যাম ও ইন্টারন্যাল মেমোরির সাথে সমঝোতা করতে পারেন। শুধু জেনে নিতে হবে পরে আপনি প্রয়োজন মত র্যাম লাগাতে পারবেন কিনা। যখন আপনার হাতে টাকা আসবে তখন আপনি এক্সট্রা র্যাম এবং SSD লাগিয়ে নিতে পারবেন। সাথে আর দুটো জিনিস অবশ্যই গুরুত্ব দেবেন একটি হল আপনার ল্যাপটপের ওয়ারেন্টই। যতদিন বেশি সম্ভব করিয়ে নেবেন। আর অরিজিনাল অপারেটিং সিস্টেম ।
আশা করি একটি স্পষ্ট ধারনা দিতে পেরেছি। কোন জিজ্ঞাসা থাকলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।
0 Comments