ভারতে এখন করোনা রোগের জন্য দু ধরনের টীকা দেওয়া হচ্ছে। একটি কোভিশিল্ড অপরটি কোভ্যাক্সিন। একটি ব্রিটেনের অন্যটি ভারতের।কিন্তু কোনটি নেবেন তা বুঝে উঠতে পারছেন না। অথবা ইতিমধ্যেই নিয়ে ফেলেছেন কিন্তু বুঝতে পারছেন না কোনটি বেশী কার্যকরী। তাহলে চলুন বিস্তারিত জেনে নিই কোভিশিল্ড না কোভ্যাক্সিন- কোনটির কি খুঁটিনাটি।
কোভিশিল্ড নামে আমরা যার সাথে পরিচিত সেটি ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড এস্ট্রজেনিকার উদ্ভাবন। ভারতে এটি উৎপাদনের দায়িত্ব পেয়েছে সিরাম ইন্সটিটিউট। আর কোভ্যাক্সিন হল সম্পূর্ণ ভারতীয় টিকা। ভারত বায়টেক নামে একটি কোম্পানি এর উৎপাদন করছে।
কোভিশিল্ড নামে পরিচিত টিকাটি সাধারণ সর্দিজ্বরের ভাইরাসের একটি দুর্বল সংস্করণ থেকে তৈরি। এটি শিম্পাঞ্জির দেহে হয় এবং এর নাম এডিনোভাইরাস।টিকা তৈরির জন্য এটাকে এমনভাবে পরিবর্তন করা হয়েছে যাতে এটা দেখতে অনেকটা করোনাভাইরাসের মত হয় - তবে তা মানবদেহে কোন অসুস্থতা তৈরি করতে পারে না। এটি দেওয়া হলে মানব দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা আন্টি বডি তৈরি করতে শুরু করে। যা করোনা ভাইরাসের আক্রমণ থেকে শরীর কে রক্ষা করে।
অন্যদিকে কোভ্যক্সিন টিকাটি তৈরি হয়েছে মৃত করোনাভাইরাস দিয়ে - যাকে বলে 'ইনএ্যাক্টিভেটেড ভ্যাকসিন' -
যা নিরাপদে ইনজেকশন আকারে মানুষের শরীরে দেয়া যায়।ভারত
বায়োটেক এ জন্য করোনাভাইরাসের
একটি নমুনা ব্যবহার করেছে - যা পৃথক করেছে
ভারতেরই ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি।টিকা
উৎপাদনকারী এবং ওষুধ নিয়ন্ত্রক
কর্তৃপক্ষের মতে, কোভ্যাক্সিন নিরাপদ এবং এটা মানবদেহে
জোরালো রোগ প্রতিরোধী প্রতিক্রিয়া
সৃষ্টি করে।এটা
মানবদেহে ইনজেকশন আকারে দেওয়া হলে - রোগপ্রতিরোধী দেহকোষগুলো তখন ওই মৃত করোনাভাইরাসটিকে
'চিনতে পারে' এবং দেহের রোগপ্রতিরোধ
ব্যবস্থাকে জাগিয়ে তোলে । তখন
ভাইরাসটির বিরুদ্ধে দেহে এ্যান্টিবডি তৈরি
হতে থাকে।
দুটি ভ্যাক্সিনের ক্ষেত্রেই প্রথম ডোজের পর ৪ থেকে ১২ সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করতে হয়।
দুটি ভ্যাক্সিনই ২ ডিগ্রি তাপমাত্রাই সংরক্ষণ করা যায়।
যারা ভাবছেন ভারতের তৈরি ভ্যাক্সিন কি বিদেশী ভ্যাক্সিনের সমগোত্রীয় হতে পারবে? এই প্রশ্নের
উত্তরে জানাই- টিকা তৈরির ক্ষেত্রে বিশ্বের এক নেতৃস্থানীয় দেশ হলো ভারত। তাদের ছ'টি বড় আকারের টিকা প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান আছে যা পৃথিবীর ৬০ শতাংশ টিকা উৎপাদন করে।ভারত বায়োটেক নামে ২৪ বছরের পুরোনো একটি টিকা উৎপাদনকারী কোম্পানি এই কোভ্যাক্সিন উদ্ভাবন করেছে। তারা এযাবৎ ১৬টি টিকা তৈরি করেছে এবং ১২৩টি দেশে তা রপ্তানি করে থাকে।
এই ভ্যাক্সিন নেওয়ার পর কী কী পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে-
কোভিশিল্ড(COVISHIELD) এবং কোভ্যাক্সিন(COVAXIN) দুটিকেই ভারত সরকার ছাড় পত্র দিয়েছে। বর্তমানে সরকারি ভাবে এই দুটি ভ্যাক্সিন ই দেওয়া হচ্ছে। বিশেষজ্ঞ দের মতে দুটির যেকোনোটি নিশ্চিন্তে নিতে পারেন। না নেওয়া টা বুদ্ধিমানের কাজ নই। যেভাবে করোনা আবার নতুন রূপে ফিরে আসছে এবং প্রানহানি ঘটাচ্ছে তাতে সমাজের ও পরিবারের কথা ভেবে প্রত্যেকে নির্ভয়ে কোভিড ভ্যাক্সিন গ্রহণ করুন।
0 Comments