মাঝে মাঝেই খবর ভেসে আসে অমুক সালের অমুক তারিখ পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে। পৃথিবীর জন্ম হল কীভাবে, ভবিষ্যৎ কী তা নিয়ে আমাদের জানার আগ্রহ প্রবল । চলুন আজ জেনে নিই পৃথিবী সম্পর্কে বহু অজানা তথ্য।
সৌর জগতের পঞ্চম বৃহত্তম এবং সূর্যের তৃতীয় নিকটতম গ্রহ হল আমাদের পৃথিবী। আনুমানিক প্রায় চারশো ষাট কোটি বছর আগে পৃথিবীর জন্মের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। শুরুতে সদ্যোজাত সূর্যকে ঘিরে আবর্তিত হচ্ছিল মজাগতিক ধূলিকণা। পরে ধূলিকণা গুলি ছোট পিন্ডের আকারে গ্রহানুর জন্ম দেয়। নিজেদের অভিকর্ষের টানে এই গ্রহাণুগুলি এক সঙ্গে মিলেমিশে সৃষ্টি করে পৃথিবী এবং অন্যান্য গ্রহ।
👉জন্মের সময় পৃথিবী ছিল উত্তপ্ত, গলিত শিলার মতো।
👉এরপর প্রায় ৫ কোটি বছর বাদে মঙ্গলের মতো আয়তনের এক দৈতাকার শিলা আছড়ে পড়ে সদ্যোজাত পৃথিবীর উপর। সেই ভয়ংকর আঘাতে উৎপন্ন প্রচন্ড উত্তাপে এই শিলা গলে ছিটকে যায়। ছিটকে ওঠা ওই গলিত শিলাই ঠাণ্ডা হয়ে সৃষ্টি হয় চাঁদের।
👉জন্ম হওয়া মাত্রই পৃথিবীর চারপাশে মিথেন, হাইড্রোজেন ও অ্যামোনিয়ার মতো বিষাক্ত গ্যাসের এক আবহ মন্ডল তৈরি হল। ভূপৃষ্ঠের সক্রিয় আগ্নেয় গিরি গুলো ছিল এই বিষাক্ত গ্যাসের উৎস।
👉প্রায় ১০০ কোটি বছর পরে আবহমণ্ডল পরিস্কার হতে শুরু করল। জলীয় বাস্প থেকে মেঘের সৃষ্টি হল এবং তা বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ে জন্ম দিল সাগর- মহাসাগরের।
👉মহাকাশ থেকে পৃথিবীকে দেখে মনে হয় মহাসাগরে পূর্ণ এক গ্রহ। পৃথিবীর মাত্র ২৯ শতাংশ হল স্থল ভাগ। বাকি ৭১ শতাংশ হল জলভাগ। হরেক রকম জীবের দেখা মেলে এই গ্রহে। জলের উপর নির্ভর করেই তারা বেঁচে থাকে। বিজ্ঞানী দের মতে পৃথিবীতে প্রথম প্রানের স্পন্দন এই জলেই।
👉 আপাত ভাবে স্থির মনে হলেও পৃথিবী প্রতি ঘন্টায় গড়ে ১৬০০ কিলোমিটারেরও বেশি বেগে নিজের অক্ষকে কেন্দ্র করে অবিরাম ঘুরপাক খাচ্ছে। আমরা এই ঘূর্ণন টের পাইনা, কারণ পৃথিবীর অভিকর্ষ শক্তভাবে আমাদের ভূপৃষ্ঠে আটকে রেখেছে।
👉পৃথিবী লাট্টুর মতো পাক খেতে খেতে সূর্যকে পরিক্রমণ করে বলেই পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গা থেকে সূর্যের আপাত গতি লক্ষ করা যায়। সেজন্য মনে হয় পৃথিবী স্থির আছে সূর্য ঘুরছে।
👉যেকোন সময়ে পৃথিবীর অর্ধেকটা সূর্যের দিকে মুখ করে থাকে, বাকি অর্ধেক থাকে সূর্যের বিপরীতে। সূর্যের দিকের অংশে হয় দিন আর বিপরিত দিকের অংশে হয় রাত্রি।
👉পৃথিবীর ভবিষ্যৎ- পৃথিবীর ভবিষ্যৎ অনেকাংশেই সূর্যের সঙ্গে জড়িত। সূর্যের তাপমাত্রা দিন দিন বাড়ছে। বিজ্ঞানীদের অনুমান আগামি ১১০ কোটি বছর পরে সূর্যের ঔজ্বল্য প্রায় ১০ শতাংশ বেড়ে যাবে।আর ৩৫০ কোটি বছর পর তা ৪০ শতাংশ বাড়বে। ওইরকম তাপমাত্রায় পৃথিবীর সমস্ত সাগরের জলই বাষ্পীভূত হয়ে যাবে।
আজি হতে কোটি বর্ষ পরে-
৯০ কোটি বৎসর পরে- ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা অনেক বেড়ে যাবে। বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমান কমবে। উদ্ভিদের সালোক সংশ্লেস প্রক্রিয়া ব্যহত হবে। উদ্ভিদ ও প্রাণিজগতের অস্তিত্ব বিলুপ্ত হবে।
আরও ১০০ কোটি বৎসর পরে- পৃথিবী পৃষ্ঠের সমস্ত জল বাষ্পীভূত হয়ে যাবে। পৃথিবী পৃষ্ঠে গড় উষ্ণতা প্রায় ৭০ ডিগ্রি সে . পৌছাবে।
আরও ৫০ কোটি বৎসর পরে- পৃথিবীর এরকম অবস্থা আরও বেশ কিছুদিন স্থায়ী হবে।
আরও ২৩০ কোটি বৎসর পরে- সূর্য অতি উত্তপ্ত হয়ে লাল দানব নক্ষত্রে পরিনত হবে। সূর্যের ব্যাসার্ধ প্রায় ২৫০ গুন বেড়ে যাবে।
বর্তমান পৃথিবী এক নজরে-
সূর্য থেকে গড় দূরত্ব- ১৪.৯৬ কোটি কিমি
নিরক্ষীয় ব্যাস- ১২৭৫৬ কিমি
গড় তাপমাত্রা- ১৫ ডিগ্রি সে .
উপগ্রহের সংখ্যা- ১
বায়ুমন্ডলের উপাদান- অক্সিজেন- ২১%
নাইট্রোজেন- ৭৮%
(ইন্টারনেট এবং বিভিন্ন সুত্রে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এটি লেখা হয়েছে )
আরও পড়ুন- করোনার টিকা- কোন দেশ কতটা এগোলো। 👈
0 Comments