প্রজাতন্ত্র দিবস(Republic Day) কী

প্রজাতন্ত্র দিবস (Republic Day)


ভারতে 26 জানুয়ারী দিনটি প্রতি বছর প্রজাতন্ত্র দিবস হিসেবে অত্যন্ত মর্যাদার সাথে পালিত হয়ে থাকে। প্রজাতন্ত্র শব্দটি আসলে রাজতন্ত্রের বিপরীত। তন্ত্র মানে শাসন। রাজার শাসন রাজতন্ত্র।প্রজার শাসন প্রজাতন্ত্র। এখন প্রশ্ন হল ভারতের প্রজা সাধারণ কি ভারতের শাসন নিয়ন্ত্রণ করে? করলে কীভাবে। আর কেনই বা এই দিনটিকেই প্রজাতন্ত্র দিবস বলা হয়। দিনটির আলাদা কি গুরুত্ব রয়েছে?
ভারতবর্ষে শাসন কর্তা নির্বাচনের  প্রধান মাধ্যম হল ভোট। সংখ্যা গরিষ্ঠের ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাই দেশ শাসন করেন। তাছাড়া ভারতের শাসন বিভাগের সর্বোচ্চ পদাধিকারী রাষ্ট্রপতি ও প্রজা সাধারণের ভোটে পরোক্ষ ভাবে নির্বাচিত। জনগনের নির্বাচিত প্রতিনিধরাই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করেন। এই অর্থে ভারতকে একটি প্রজাতন্ত্রিক বা সাধারণ তান্ত্রিক রাষ্ট্র বলা চলে। অন্তত সংবিধানগত ভাবে ভারতে সাধারণ মানুষই প্রধান। এখানে কোনো বংশানুক্রমিক শাসক নেই। একটি গণতান্ত্রিক সাধারণ তন্ত্র বলতে আমরা সাধারণভাবে এমন একটি রাষ্ট্রকে বুঝি যেখানে একজন নির্বাচিত রাষ্ট্রপ্রধান আছে এবং জনগণের প্রতিনিধিদের দ্বারা সরকার পরিচালিত হচ্ছে।

পড়ুন- নেতাজীর বাণী
26 জানুয়ারি দিনটিকেই প্রজাতন্ত্র দিবস হিসেবে বেছে নেওয়ার একটি ঐতিহাসিক কারণ রয়েছে। পরাধীন ভারতে 1930 খ্রিস্টাব্দ থেকে প্রতি বছর জানুয়ারি মাসে 26 তারিখ স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালিত হত। 1929 সালে জাতীয় কংগ্রেসের লাহোর অধিবেশনে এই স্বাধীনতা দিবস পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল। কিন্তু ভারত স্বাধীনতা পেল 1947 সালের 15 আগস্ট। তখন থেকে স্বাধীনতা দিবস হয়ে গেল 15 আগস্ট। স্বাভাবিক ভাবেই 26 জানুয়ারী তার গুরুত্ব হারাল। স্বাধীন ভারতের নতুন সংবিধান রচনার কাজ শেষ হল 1949 সালে। ঐ বছরই 26 নভেম্বর গণপরিষদে এই নতুন সংবিধান গৃহীত হল। এবার যেকোন দিন থেকেই এই সংবিধান কার্যকর করা যাবে। তখন সংবিধান প্রণেতা গণ আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করলেন এই নতুন প্রজাতন্ত্রিক সংবিধান কার্যকর করা হবে পরের বছর অর্থাৎ 1959 সালের 26 জানুয়ারি থেকে। 26 জানুয়ারী দিনটিতে ভারতের প্রজাতন্ত্রিক সংবিধান কার্যকর হয়েছিল বলে এই দিনটি প্রজাতন্ত্র দিবস হিসেবে পালিত হয়ে থাকে।
                                                                                                                    পড়ুন
স্বাধীনতার এত বছর পরেও একটি প্রশ্ন বার বার উঁকি দেয় মনে ভারত কি সত্যিই প্রজাতন্ত্রে উপনীত হতে পেরেছে? রাজতন্ত্র রাজারা সুখী থাকে। প্রজাতন্ত্রে প্রজারা কি আদৌ সুখে আছে? আজও ভারতের এক বিরাট অংশের জনগন অশিক্ষার অন্ধকারে ডুবে। জনস্বাস্থ্য এখনো সব মানুষের কাছে অধরা। কর্মহীন বেকারের সংখ্যা ক্রমবর্ধমান। মুষ্টিমেয় ধনী মানুষ আরো ধনী হচ্ছে।গরীব আরো অভাবী। কৃষকের ফসলের দাম নেই। শ্রমিকের ন্যায্য মজুরী নেই। রাষ্ট্রের সমবন্টন ব্যবস্থা নেই । কর্মমুখী শিক্ষা নেই।সবার জন্য স্বাস্থ্য শুধুই কাগজ কলমে।রাস্তাঘাটে নারীর নিরাপত্তা নেই। অসহায় বৃদ্ধ দের সর্বজনীন পেনশন নেই। 
শুধু কাগজকলমে নয়।প্রজাতন্ত্র সত্যিকারের প্রজা সাধারণের কথা ভেবে নীতি তৈরী হোক। যে নীতি জাতি, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ,ধনী, দরিদ্র নির্বিশেষে সকলের মঙ্গল করবে।



 

Post a Comment

0 Comments