গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন অফ বেঙ্গল - গনগনি (Grand Canyon of bengal)

 #Grand Canyon of bengal 


কলকাতা থেকে মোটামুটি ১৭৫ কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত "গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন অফ বেঙ্গল" নামে পরিচিত পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গরবেতার গনগনি । সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময় অপরূপ দৃশ্য ক্যামেরা বন্দি করার নেশায় এবং শীত কালে পিকনিক করার জন্য প্রচুর মানুষ ঘুরতে যান এখানে। ছাত্র ছাত্রীদের নিয়ে শিক্ষামূলক ভ্রমণের ও আদর্শ জায়গা। নদীর ক্ষয়ের ফলে ল্যাটেরাইটে তৈরি হওয়া অপূর্ব সুন্দর প্রাকৃতিক ল্যান্ডস্কেপ দেখতে দূরদূরান্ত থেকে লোকজন এখানে আসেন। 

লাল মাটির ঢেউ খেলানো প্রান্তর , কাজুবাদাম গাছের সারি, মাঝে মাঝে শাল পিয়ালের ঘন জঙ্গল। পাথুরে পথ পেরিয়ে নেমে আসা যায় নদীর পাড়ে। নদীর নাম শিলাবতি। স্থানীয় নাম শিলায়। নীচে নামার জন্য রয়েছে সিঁড়ি। বাঁধনহারা বেনির মত এঁকে বেঁকে চলেছে  এই শিলাবতি। কোথাও জল এক হাঁটু কোথাও আবার এক কোমর। পুরুলিয়ার মানভুম থেকে উতপন্ন হয়ে রাঢ় অঞ্চলের উপর দিয়ে এঁকেবেঁকে দ্বারকেশ্বরের সাথে মিশে রূপনারায়ন নাম নিয়ে সাগরে গিয়ে পড়েছে। 

আরও পড়ুন- ক্ষীরপাইয়ের বাবরশা মিষ্টি 👈

শীতের সকালে নদী ও ক্যানিয়নের এক অপূর্ব রূপ দেখা যায়। নদীর বুকে জেগে ওঠা চড়াতে ওখানকার মানুষ চাসবাস করে।  তবে বর্ষার সময় এর রূপ হয় ভয়ঙ্কর। গরমকালে হেঁটে পার হওয়া যায় এই নদী। নদীর ওপারে দাঁড়িয়ে গনগনির "দ্য গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন অফ বেঙ্গল " কথাটি বেশ অনুভব করা যায়। 

গনগনির পৌরানিক কাহিনি

নদীর ওপারের গ্রামের নাম ভিখনগর।কথিত আছে পাণ্ডবরা তাদের অজ্ঞাত বাসের সময় এখানে এসেছিলেন। । লোকমুখে শোনা যায় এক দিন যুধিষ্ঠির এই নদীর পাড়ে এক ব্রাহ্মণকে বসে কাঁদতে দেখেন। ব্যাকুল হয়ে তার কান্নার কারন জিজ্ঞাসা করে জানতে পারেন নদীর ওপারে বক রাক্ষস নামে এক রাক্ষস থাকে সে প্রতিদিন একজন করে মানুষকে ভক্ষণ করে। আজ তার পালা। তাই সে কাদছে। যুধিষ্ঠির এই কথা শুনে রেগে যান এবং বক রাক্ষস কে বধ করার জন্য ভীম কে পাঠান।তাদের মধ্যে প্রবল যুদ্ধ হয়। ভীম বককে বধ করে।  এই যুদ্ধের ফলেই গনগনির ক্যানিয়নের সৃষ্টি হয় বলে ওখানকার লোক মুখে প্রচলিত। 


গনগনির ঐতিহাসিক কাহিনি

গনগনির ঐতিহাসিক গুরুত্বও কম নয়। চুয়ার বিদ্রহের অন্যতম নায়ক অচল সিংহ তার দলবল নিয়ে আস্তানা গেড়েছিলেন গনগনির গভীর জঙ্গলে। সেখান থেকে গেরিলা যুদ্ধের মাধ্যমে ইংরেজদের রাতের ঘুম কেরে নিয়েছিলেন। ইংরেজ সেনা কামান দেগে গোটা শালবন উড়িয়ে দিয়েও অচল সিংহ কে দমন করতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত বগরির শেষ রাজা ছত্র সিংহ ধরিয়ে দেন অচলদের। এই গনগনির মাঠেই অচল ও তার সঙ্গীদের ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল।  

কীভাবে যাবেন 

কলকাতা থেকে গাড়িতে করে  গরবেতা আসতে পারেন। ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে। পাশকুরা- ঘাটাল- চন্দ্রকোনা হয়ে গরবেতা। 

ধর্মতলা থেকে বাসে আসতে পারেন গরবেতা।

ট্রেনে আসতে পারেন হাওড়া থেকে লোকাল বা এক্সপ্রেস ধরে। যেসব ট্রেন খড়গপুর হয়ে বাঁকুড়া , পুরুলিয়া যায় সেই ট্রেন ধরেলে গরবেতায় নামতে পারবেন। 

কোথায় থাকবেন

গরবেতায় থাকার জন্য বেশ কিছু হোটেল ও ধর্মশালা রয়েছে। এর মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য হোটেল হল সোনাঝুরি। 


আর কি কি দেখার আছে 

এখান থেকে কাছাকাছি ঘুরতে পারেন-

গোপগড়ের ইকোপার্ক। 

আরাবারি জঙ্গল।

সর্বমঙ্গলা কালি মন্দির, রাধানাথ সিংহ স্মৃতি মন্দির, রাধা বল্লভ মন্দির। 

ভিডিও দেখার জন্য ক্লিক করুন 👈

 






Post a Comment

0 Comments